এডভোকেট মোঃ জসীম উদ্দীন সরকার: একজন প্রাজ্ঞ জনসেবক
এডভোকেট মোঃ জসীম উদ্দীন সরকার একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং জননিবেদিত সমাজসেবক। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচিত ভিপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে নেতৃত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি-কলাবাগান-নিউমার্কেট-হাজারীবাগ) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। তিনি ধানমন্ডি-কলাবাগান-নিউমার্কেট-হাজারীবাগ উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান সহ অসংখ্য সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। শিক্ষাজীবন, ছাত্ররাজনীতি, পেশাগত কর্মকাণ্ড ও সামাজিক সেবামূলক কাজ ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তার অবদান সমানভাবে উজ্জ্বল। তিনি ন্যায়, সততা, সুশাসন ও গণমানুষের অধিকারের পক্ষে স্পষ্ট অঙ্গীকার নিয়ে রাজনীতির মাটিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
পারিবারিক জীবন
এডভোকেট মোঃ জসীম উদ্দীন সরকার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর দাদা মরহুম জিন্নাত আলী সরকার ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। তাঁর পিতা মরহুম ফজলুর রহমান সরকার (সোধন সরকার) ছিলেন মুরাদনগর উপজেলার একজন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ, যিনি সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনবার জাতীয় স্বর্ণপদক লাভ করেন। তাঁর মা ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী। বর্তমানে তিনি সপরিবারে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় বসবাস করছেন।
শিক্ষাজীবন
মেধাবী ছাত্র হিসেবে শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি ঢাকা বোর্ডের অধীনে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৪টি বিষয়ে লেটার মার্কসহ ৭৪% নম্বর পেয়ে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি এবং একই ধারাবাহিকতায় এইচ.এস.সি পাশ করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মান ও এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন।
রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক জীবন
স্কুলজীবন থেকেই তিনি ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১১ দফা আন্দোলনে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে স্কুলে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে ইসলামী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে কুমিল্লা শহর শাখা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮০-৮১ সেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভিপি (সহ-সভাপতি) নির্বাচিত হয়ে ছাত্রনেতৃত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
পেশাগত জীবন
১৯৯২ সাল থেকে তিনি আইন পেশায় যুক্ত আছেন। তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতি এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য ও নিয়মিত প্র্যাক্টিশনার। দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে তিনি ২০০৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে অবস্থিত রাজকীয় সৌদি দূতাবাসের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া চীন, কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বাংলাদেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবেও তিনি আইনি সহায়তা প্রদান করে আসছেন।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাঁর বিচরণ অত্যন্ত ও গৌরবের। ১৯৮০ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামী ছাত্র সম্মেলনে (IIFSO) তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, যেখানে বর্তমান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার এবং নর্থ ক্যারোলিনায় অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনে ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট’ (NDI)-এর আমন্ত্রণে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ২০১৫ সালে সৌদি বাদশাহর রাজকীয় মেহমান হিসেবে পবিত্র হজ্ব পালন করেন।
সমাজসেবা ও জনকল্যাণ
রাজনীতি ও পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি সমাজসেবায় নিবেদিতপ্রাণ। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় মোহাম্মদপুর, লালবাগ, মিরপুর ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৬-৮৭ সালে ঢাকায় মশক নিধন অভিযানে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ঢাকা-১০ নির্বাচনী এলাকার গরীব ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানে তিনি নিয়মিত সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এছাড়াও ১৯৭৮ সালে আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষাবিস্তারেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য; তিনি কুমিল্লার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ইবনে তাইমিয়া ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠায় ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
উপসংহার
এডভোকেট মোঃ জসীম উদ্দীন সরকার একজন সৎ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব। বিগত দিনে তিনি যেমন ছাত্রদের অধিকার আদায়ে ভিপি হিসেবে সফল ছিলেন, তেমনি কর্মজীবনেও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা-১০ আসনকে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসিত ও মানবিক জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি জনগণের দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশী।